আপনি কি জানেন ডাবের পানির উপকারিতা এবং অপকারিতা সম্পর্কে?জানেন না তো! তাহলে এই পোস্টটি হতে পারে আপনার জন্য খুবই উপকারী।
কারণ আমরা এই পোস্টটিতে ডাবের এমন কিছু উপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব যা আপনি জানতেন না।ডাবের পানির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে জানতে এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ুন।ডাব অতি পরিচিত একটি ফল। নিয়মিত ডাব খেলে কিডনিতে কোন সমস্যা হয় না।তবে যাদের কিডনিতে সমস্যা রয়েছে তাদের ডাবের পানি খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।কারণ কিডনি অকার্যকর হলে শরীরের অতিরিক্ত পটাশিয়াম দেহ থেকে বের হতে পারে না।ফলে ডাবের পানিতে থাকা পটাশিয়াম এবং দেহের পটাশিয়াম এক হয়ে কিডনি ও হৃদপিণ্ড দুটোকেই অকার্যকরী করে দেই।ফলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে।
যেসব ব্যক্তির দেহে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে এবং যাদের দেহ থেকে এই উপাদানটি বের হয় না তাদের পানি পান করা একদমই উচিত নয়।যেসব রোগী কিডনি এবং হৃদরোগে আক্রান্ত তাদেরকে ডাবের পানি পান করানোর আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিত।দেহে পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিলে ডাবের পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয়।ডায়রিয়া বা কলেরা রোগীদের ঘন ঘন পাতলা পায়খানা ও বমি হলে দেহে প্রচুর পরিমাণে পানি ও খনিজের ঘাটতি দেখা দেয়। নিয়মিত ডাবের পানি পান করলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর হয়।ডাবের পানি কিডনি সংক্রান্ত রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে।ডাবের পানিতে যথেষ্ট পরিমাণে আয়রন রয়েছে।রক্ত উৎপাদন করতে যা একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
ডাবের পানিতে উচ্চমাত্রায় খনিজ লবন,ক্যালসিয়াম,ম্যাগনেসিয়াম ও ফসফরাস রয়েছে।এসব খনিজ লবন দাঁতের উজ্জলতা বৃদ্ধি করে এবং দাঁতের মাড়িকে মজবুত করে তুলে।অনেকেরই দাঁতের মাড়ি থেকে রক্ত বের হয় এবং মাড়ি কালচে লাল হয়ে যায় এই সমস্যা থেকে মুক্তি দিবে এই খনিজ লবণ।
আরো পড়ুন ঃসফেদা ফল খাওয়ার ১৫টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
প্রস্রাবের কিছু সমস্যায় ডাবের পানি খুবই কার্যকরী।মুখে জল বসন্তের দাগ সহ বিভিন্ন ছোটখাটো দাগ থাকলে তিন বেলা ডাবের পানি খেলে অথবা যেখানে দাগ রয়েছে সেখানে দিলে দাগ মুছে যায় এবং মুখের উজ্জ্বলতা বাড়ে।গ্লূকোজ বা স্যালাইন হিসেবেও ডাবের পানি ব্যবহারিত হয়। ডাবের পানিতে উল্লেখযোগ্য কোন পুষ্টি না থাকলেও এটি স্বাস্থের জন্য খুবই উপকারী।
গরমে সস্তি পেতে ডাবের পানির কোন বিকল্প নেই। কিন্তু আপনি কি জানেন ডাবের পানি খাওয়ার পাশাপাশি ডাবের শাঁসের ও অনেক উপকারিতা রয়েছে।তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক ডাবের শাঁসের উপকারিতা সম্পর্কে।
ডাবের শাঁসে যেই তৈলাক্ত পদার্থ রয়েছে তা হৃদযন্ত্রের জন্য খুবই উপকারী। এটি রক্তের খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে এবং ভালো কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে। ডাবের শাঁসে ফাইবারের পরিমাণ অনেকটাই বেশি তাই পরিমাণ মতো নিয়মিত যদি ডাবের শাঁসে পাওয়া যায় তাহলে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে অন্ত্রের স্বাস্থ্যও ভালো রাখে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ শাঁস রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়িয়ে তুলে। ডাবের শাঁসের মধ্যে রয়েছে ম্যাঙ্গানিজ যা প্রদাহ নাসে সহায়তা করে। শরীরে গ্লুকোজের অভাব হলে তাও পূরণ করে শক্তি যোগান দিতে পারে এই ডাবের শাঁস।ডাবের শাঁসে উপস্থিত মিডিয়াম চেন ট্রাইগ্লিসারাইড যৌগটি গ্লুকোজের বিকল্প হিসেবে কাজ করে যা মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।
ডাবের পানির সুমিষ্টতার সম্পর্কে আমরা সকলেই জানি। অন্য যেকোনো ধরনের পানীয়র চাইতে ডাবের পানি অনেক বেশি সতেজকারক অথবা রিফ্রেশিং পানীয় হিসেবে সুপরিচিত। স্বাস্থ্যের জন্যও অনেক বেশি উপকারী। ডাক্তাররা যেই যেই কারণে ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দেনঃ-পানি শূন্যতা, ডায়রিয়া, কিডনির সমস্যা এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহ আরও নানান ধরনের শারীরিক সমস্যায় ডাক্তাররা ডাবের পানি খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শুধু শারীরিক সমস্যার সমাধানই নয় ডাবের পানিতে রয়েছে অসাধারণ কিছু সৌন্দর্য উপকারিতা।ত্বকের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধানে ডাবের পানির বিকল্প নেই। তাহলে আসুন জেনে নেই এমনই ডাবের পানির কিছু অজানা উপকারিতা।
ডাবের পানি খুবই ভালো একটি প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। বিশেষ করে তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ডাবের পানি সবচাইতে বেশি উপকারী। সাধারণভাবে ত্বকে লাগালে মুখের ত্বকের পাশাপাশি পুরো শরীরের ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে ডাবের পানি।
ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে কাজ করে ডাবের পানি। ডাবের পানির মাস্ক তৈরি করতে যা যা উপকরণ লাগবেঃ-২ চা চামচ হলুদের গুড়া,২/৩ টেবিল চামচ ডাবের পানি এবং এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে নিন।২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আলতো ঘোষে তুলে ফেলুন।এই মাস্কটি ত্বকের উজ্জলতা বাড়াতে বেশ কার্যকরী।
রোদে পোড়া দাগ দূর করতে ডাবের পানি ঃ-২ টেবিল চামচ মুলতানি মাতির সঙ্গে পরিমাণ মতো ডাবের পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন।এই মিশ্রণটি ত্বকে লাগান বিশেষ করে রোদে পোড়া স্থানে ২০ মিনিট রেখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।দ্রুত রোদে পোড়া দাগ দূর করতে এই মাস্কটির বিকল্প নেই।
ত্বকে বয়সের ছাপ,দাগ, মেছতা এবং রিঙ্গেল দূর করতে ডাবের পানির কোন তুলনা নেই। প্রতিদিন ডাবের পানি দিয়ে মুখ ধোয়ার অভ্যাস করুন এবং দিনে এক গ্লাস ডাবের পানি পান করুন এতে আপনি লাভবান হবেন।
এটা সত্য যে বোতলের পানিতে পটাসিয়াম থাকে। তাই কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীদের বোতলজাত পানি খাওয়া কমাতে বলা হয়। তবে আপনি এমন খাবার খান যাতে বেশি পটাশিয়াম থাকে। 100 মিলি মিনারেল ওয়াটারে 185 মিলিগ্রাম পটাসিয়াম থাকে। অন্যদিকে, কলায় রয়েছে ৪২২ মিলিগ্রাম পটাসিয়াম এবং আলুতে রয়েছে ৭১৫ মিলিগ্রাম। কমলা এবং টমেটোতেও প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে। তাই পটাসিয়ামের সীমাবদ্ধতায় ভুগলে এই খাবারগুলো মাথায় রাখুন।
এটা সত্য যে বোতলজাত জল দ্রুত ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি দেয় এবং এটি পান করার পরে আপনাকে বেশ ভাল বোধ করে। তবে এতে কোনো ক্যালোরি বা শক্তি নেই। 100 মিলি ডাবের পানিতে 2.7 মিলিগ্রাম চিনি থাকে, যা অনেক দোকানে কেনা জুস, পানীয় বা কোমল পানীয়ের চেয়ে অনেক কম। বাণিজ্যিক পানীয়ের তুলনায় এটি ক্যালোরিতেও কম। একে কম ক্যালোরিযুক্ত পানীয় বলা হয়। এটা ঠিক নয় যে বোতলের পানিতে প্রচুর শক্তি থাকে। যাইহোক, প্রায় সমস্ত শর্করাই সাধারণ শর্করা যা দ্রুত রক্তে শোষিত হতে পারে।
এটাও বিশ্বাস করা হয় যে বোতলের পানিতে স্যালাইনের মতো লবণ ও খনিজ পদার্থ থাকে, তাই এটি পান করলে রক্তচাপ বাড়ে। এটা ঠিক না. কারণ ডাবের পানির লবণে মূলত পটাশিয়াম থাকে, সোডিয়াম নয়। এবং পটাসিয়াম রক্তনালীগুলিকে প্রসারিত করে, যা আসলে রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে। সোডিয়াম বিপরীত কাজ করে। এই কারণে উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের কলের জল পান করা উচিত নয়।
কবুতরের রস কলেরা প্রতিরোধ করে, বদহজম দূর করে, খাদ্য হজমের উন্নতি ঘটায় এবং গ্রীষ্মকালীন পানিশূন্যতার সমস্যায় কার্যকর ভূমিকা রাখে। ব্যায়ামের পরে যখন আপনার শরীর ঘামে ক্লান্ত হয়ে পড়ে তখন বোতলজাত পানি পান করা আপনার শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। যদি আপনার ত্বকে তাপ থেকে দাগ পড়ে বা পুড়ে যায় তবে এটি প্রশমিত করার জন্য জলের ক্যান লাগান।
এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন