৩০ দিনে ওজন কমানোর উপায়

ওজন এমন একটি জিনিস যদি বাড়তে থাকলে দুশ্চিন্তার পরিমাণও বাড়তে থাকে। সুস্থতা বজায় রাখার জন্য জরুরী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা। অতিরিক্ত ওজন মানেই বাড়তি অসুখ-বিসুখের ভয়। আপনার কি খেতে-শুতে-বসতে সব সময়ই নিজের ওজন নিয়ে দুশ্চিন্তা হয়? আসলে নিজের ইচ্ছামতো ওজন কমানোর চেষ্টা করা উচিত না,কারণ ভুলভাল ডায়েট করলে শরীরের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।


ওজন কমানোর সবচেয়ে উত্তম উপায় হল ধীরে ধীরে এবং স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন কমানো। মাত্র এক মাসে পাঁচ কেজি ওজন কমানো সম্ভব তবে এর জন্য আগে আপনার নিজেকে মানসিকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। আপনাকে মনে করতে হবে ওজন কমানোর জন্য যা কিছু দরকার আপনি সেগুলোর জন্য পুরোপুরি ভাবে প্রস্তুত। তাহলে সবকিছুই সহজ হয়ে যাবে। তার মানে আপনি ইতিমধ্যে অর্ধেকটা এগিয়ে গেছেন।

সাধারণভাবে কেউ যদি এক মাসে পাঁচ কেজি ওজন কমাতে চান তাহলে নিচে দেওয়া নিয়মগুলো অনুসরণ করে দেখতে পারেন আশা করছি আপনি এক মাসে তার রেজাল্ট দেখতে পাবেন-

যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেন

  1. বার্গার
  2. স্যান্ডউইচ
  3. বিরিয়ানি
  4. চিপস
  5. আইসক্রিম
  6. চকলেট
  7. মিষ্টি
  8. ভাত, সাদা আটা/ময়দা
  9. কার্বন-ডাই-অক্সাইড যুক্ত কমল পানীয়
  10. কেক/ডোনাট
  11. অস্বাস্থ্যকর তেল চর্বিযুক্ত খাবার এবং যে কোন প্রকার ফাস্টফুড।

ডায়েটকালীন সময়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে যেই পানীয়টি পান করবেন

পানীয়টি বানাতে যা যা লাগবেঃ এক গ্লাস পানিতে এক চা চামচ ব্লেন্ড করে রাখা বিটরুটের পেস্ট মেশান। এরপর তাতে এক চা চামচ মৌরি অ্যাড করুন। তারপর পানিটি ভালো মতো মিশিয়ে নেন মিশিয়ে নেওয়া হয়ে গেলে এভাবে এক ঘন্টা রেখে দিন।এই পানীয়টি দিনে দুইবার পান করলে আপনি এক সপ্তাহের মদ্ধেই নিজের ত্বকের পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন।

ওজন কমানোর ১০টি গুরুত্বপূর্ণ টিপস

১. ভাত বা শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন

ভাত,রুটি,চিনি,মিষ্টি এবং অন্যান্য শর্করা যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। আপনার ওজন যদি বেশি হয়ে থাকে তাহলে আপনার দুপুরের খাবারে দুই চামচের বেশি ভাত না খাওয়াই উত্তম। আপনি যদি ভাত খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেন এবং যতটুকু ভাত নিয়েছেন তার দ্বিগুণ পরিমাণ সবজি দিয়ে খেলে আপনি ক্ষুধার্তবোধ করবেন না সবজি আপনার শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী এবং এটি দীর্ঘক্ষণ আপনার পেট ভরিয়ে রাখবে তাই বিশেষজ্ঞরা ডায়েটের সময় সবজি খেতে বলে থাকেন। রাতের বেলা ভাতের পরিবর্তে রুটি খেতে পারেন এবং রাতের খাবার ঘুমানোর ২ ঘন্টা আগে খেয়ে ফেলা উচিত কারণ খাওয়ার সাথে সাথে ঘুমাতে গেলে আপনার খাবারের যে ফ্যাটটুকু রয়েছে তা সরাসরি আপনার গায়ে লাগবে তাই রাতে ঘুমানোর কমপক্ষে দুই ঘন্টা আগে খাবার খেয়ে নেওয়ায় আপনার শরীরের জন্য ভালো। আপনার যদি রাতে রুটি খাওয়ার অভ্যাস না থেকে থাকে তাহলে আপনি বাজার থেকে কেনা পাউরুটি খেতে পারেন। তবে অবশ্যই সেটা তাওয়াই অথবা মাইক্রো ওভেনে টোস্ট করে খেতে হবে। কারণ পাউরুটি বানানোর জন্য ডিম,দুধ, চিনি, মাখন, তেল এবং ইস্ট ব্যবহার করা হয় তার জন্য এতে হাতে তৈরীর রুটির চেয়ে ফ্যাটের পরিমাণ বেশি থাকে। পোস্ট করার কারণে এর অতিরিক্ত ফ্যাট কেটে যাবে।

২.ওজন কমানোর জন্য সালাদ

সালাদ খাওয়ার মাধ্যমে আপনি নিজের শরীর থেকে অনেকখানি ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলতে পারবেন। সালাত বানানোর জন্য যা যা উপকরণ ব্যবহার করতে পারেনঃ শসা, টক দই, লেবুর রস, মধু এবং ভিনেগার আপনি চাইলে মাংসও অ্যাড করতে পারেন। এই উপকরণগুলো ফ্যাট কাটাতে সহায়তা করে। বিভিন্ন প্রকার সবজি যেমনঃ বেবি কর্ণ, গাজর, টমেটো, বাঁধাকপি ইত্যাদি এর সাহায্যে আপনি চাইলে সালাদ তৈরি করতে পারেন। তবে শশা প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট কাটাতে সহায়তা করে। তাই সালাদ খাওয়ার পাশাপাশি আপনি প্রচুর পরিমাণে শসা বা কিরা খেতে পারেন অতিরিক্ত ফ্যাট ঝরিয়ে ফেলার জন্য। শসা খাওয়ার ফলে আপনার শরীর অনেকক্ষণ যাবৎ ডিহাইড্রেটেড থাকবে ফলে অতিরিক্ত ঘাম ঝরবে না।চলুন যেনে নেই ওজন কমাতে লেবুর  উপকারিতা সম্পর্কে-

৩.ওজন কমাতে লেবু

ওজন কমানোর জন্য খাবারের তালিকার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো লেবু। সকালে ঘুম থেকে খালি পেটে এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে লেবুর রস এবং মধু মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস করুন। এটি পান করলে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট শরীর থেকে কেটে যায়। এছাড়াও আপনি চাইলে সামান্য পরিমাণ চিনি দিয়ে লেবুর শরবত বানিয়ে খেতে পারেন অথবা এক গ্লাস গরম পানির সঙ্গে লেবু এবং লবণ মিশিয়ে পান করতে পারেন।

মাঝেমধ্যেই হয়তো আপনার কার্বন-ডাই-অক্সাইডযুক্ত কোমল পানীয় যেমনঃ মোজো, কোকাকোলা, সেভেন আপ ইত্যাদি এর মত সব ড্রিংস খেতে ইচ্ছা করতে পারে আপনার। তবে এই সমস্ত কোমল পানীয় প্রচুর পরিমাণ ফ্যাট সমৃদ্ধ। একটি ২৫০ মিলি কোকাকোলার বোতলে ১৬-১৮ টেবিল চামচ চিনি থাকে। তবে আপনার যদি অতিরিক্ত এইসব কোমল পানীয় খেতে ইচ্ছা করে তাহলে তা খাওয়ার আগে সেটির মধ্যে অল্প পরিমাণে লেবুর রস এবং লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। এটি সফট ড্রিংকের মধ্য থেকে অনেক অংশে ফ্যাট কমিয়ে দিবে।

৪.ওজন কমাতে টক দই

টক দই খেলে শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে ফ্যাট কাটে। তবে টক দই সালাদের সঙ্গে অথবা কোন কিছু খেয়ে তারপর খাওয়া উচিত। খালি পেটে টক দই না খাওয়াই উত্তম কারণ এতে পেটে সমস্যা হতে পারে।

৫.ওজন কমাতে গ্রিন টি

গ্রিন টি শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে চর্বি বা ফ্যাট কাটাতে পারে। আপনি যদি প্রতিদিন দুইবার করে গ্রিন টি পান করেন তাহলে আপনি অনায়াসে প্রতিদিন ২০০ গ্রামের মতো ক্যালোরি ঝরিয়ে ফেলতে পারেন।

৬.ওজন কমাতে ব্লাক কফি

গ্রিন টির মতো ব্লাক কফি খেলেও চর্বি বা ফ্যাট শরীর থেকে কেটে যায়। এক কাপ গরম পানির মধ্যে আধা চামচ পরিমাণে কফি মিশিয়ে তৈরি করতে পারেন একটি পারফেক্ট ব্ল্যাক কপি চিনি ব্যবহার করবেন না।

৭. ফ্যাট কাটাতে অ্যালোভেরা

প্রথমেই একটি অ্যালোভেরা ভালো করে ছিলে নিয়ে একটি চিরনী অথবা একটি কাটা চামচ দিয়ে অ্যালোভেরাটির উপর ভালো করে ঘষতে থাকুন কিছুক্ষণ পর সেটি থাকে একপ্রকার জেল বের হবে জেলটির সঙ্গে পানি মিশিয়ে খেতে পারেন এটি চর্বি বা ফ্যাট কাটাতে অত্যন্ত উপকারী। এটি ক্যালোরি খরচ করতে অত্যন্ত কার্যকারী। যেহেতু অ্যালোভেরা জেল খুবই তেতো তাই অল্প একটু এলোভেরা জেলের সাথে অধিক পরিমাণে পানি পান করতে হবে। যদি তাও আপনার এটি খেতে কষ্ট হয় তাহলে কিছুটা পরিমাণে মধু এড করতে পারেন আপনার স্বাদমতো তবে ভুলেও চিনি ব্যবহার করবেন না।

৮.পানি এবং তরল জাতীয় খাবার

প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া হল ওজন কমানোর অন্যতম একটি কার্যকারী উপায়। এর পাশাপাশি আপনি চাইলে অন্যান্য তরল খাবার খেতে পারেন যেমনঃ গ্রিন টি, কর্ণ স্যুপ, টমেটো স্যুপ, ব্ল্যাক কফি ইত্যাদি। এতে আপনি কাজ করার এনার্জি পাবেন এবং আপনার শরীরে বাড়তি কোন ক্যালরি যোগ হবে না। তবে ভুলেও থাই স্যুপ খাবেন না কারণ এতে প্রচুর পরিমানে ফ্যাট রয়েছে।

৯. চুইংগাম

যাদের মুখ গোল বা মোটা তারা নিয়মিত চুইংগাম খাওয়ার অভ্যাস করে তুলুন। কারণ দীর্ঘ সময় ধরে চুন গ্রাম চেবানোর কারণে মুখের মাংসপেশিগুলো ব্যায়াম হয় এবং অতিরিক্ত চর্বি ঝরে যায়।

১০. ফল এবং শাকসবজি

আম এবং কলা বাদে যে কোন ধরনের ফল প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। কারণ ফল এবং শাকসবজিতে আমাদের দেহের জন্য উপকারী এবং প্রয়োজনীয় সকল ধরনের পুষ্টি রয়েছে। ফল ও শাক-সবজিতে ক্যালরি খুবই কম পরিমাণে থাকে এবং এগুলো বেশি করে খেলে খুব সহজে ক্ষুধা হওয়া লাগবে না। তবে যাদের অতিরিক্ত ওজনের সমস্যা রয়েছে তারা আম এবং কলা এড়িয়ে চলুন। কারণ কলা এবং আমে হাই ফ্রট ফাইবার রয়েছে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন